আঙুল চোষা গণতন্ত্র

জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ধানমণ্ডি ৩২ নাম্বার বাড়িতে আবারও এক সকাল। সূর্যের আলো তখনও পুরোপুরি চুলের গোঁড়ায় পৌঁছায়নি, তার আগেই হাজির হয়েছেন ডাকসুর দুর্ধর্ষ সদস্য রাফিয়া। যিনি ইতোমধ্যে দুইবার অমর খ্যাতি অর্জন করেছেন—ভাঙচুরের বীরযোদ্ধা এবং আঙুল চুষে কলাগাছ বানানোর আঞ্চলিক রেকর্ডধারী হিসেবে। কাল সকালেই তাঁর লক্ষ্য একটাই: ইতিহাসের পাতা নতুন করে লেখা—তিনবার ভাঙা। এবার তিনি এসেছেন কড়া প্রস্তুতি নিয়ে। হাতে জলের বোতল, চোখে সানগ্লাস, আর মুখে অটল দৃঢ়তা। আশপাশের মানুষ বোঝার আগেই তিনি ধানমণ্ডির বাতাসে ঘোষণা দিলেন, “আমি কি আঙুল চুষব নাকি?” বক্তব্যটি এমন সুমধুর ধ্বনি তুলল যে, সাংবাদিক থেকে শুরু করে রিকশাওয়ালা পর্যন্ত এক মুহূর্ত থমকে গেল। কেউ ভাবছে, এ এক নতুন রাজনৈতিক শব্দবন্ধ, কেউ বুঝে উঠতে পারছে না, এটি কি নতুন কোনো প্রতিবাদ কৌশল, নাকি ভবিষ্যত নির্বাচনী স্লোগান। রাফিয়া নাকি বলেন, তাঁর এই প্রশ্ন আসলে আত্মসমালোচনার প্রতীক। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকেই দায়িত্ব এড়িয়ে চলে যায়, কেউ আঙুল তোলে, কেউ চুষে। আর তিনি দুটোর মাঝপথে দাঁড়িয়ে জানতে চান—চোষা উচিত, না চোষা ঠিক নয়। একে কেউ দেখছে দার্শনিক অবস্থান, কেউ আবার দেখছে মহাবিপদে পড়া সাধারণ জ্ঞান। গতবার ভাঙচুর শেষে তিনি বলেছিলেন, “আমরা গাছ লাগাবো।” এবার নাকি পরিকল্পনা আরেক ধাপ এগিয়েছে—ভাঙার পর আঙুলের জাদুতে সেদিনই কলাগাছ তৈরি করবেন। পরিবেশবিদরা চিন্তায় পড়েছেন, এটা যদি সত্যি হয়, তবে গাছ লাগানোতেও শিল্পকলা বিভাগের টেন্ডার দেওয়া লাগবে। এক পাশে দাঁড়িয়ে এক বৃদ্ধা ফিসফিস করে বললেন, “এ দেশ এখন এমন জায়গায় এসেছে যে, আঙুল চোষাও আন্দোলন হয়ে গেছে।” তাঁর কথায় বাস্তবতার সুর স্পষ্ট, কিন্তু হাস্যরস লুকোয় না। রাফিয়া তাঁর তৃতীয় প্রচেষ্টায় সফল হননি। তবে ব্যর্থতা নাকি তাঁর অভিধানে নেই—আঙুল চোষা দিয়েই তিনি ঘোষনা দিয়েছেন, “গণতন্ত্রকে পাকাই।” ধানমণ্ডি জুড়ে এখন শুধু একটাই প্রশ্ন ঘুরছে: এই দেশে নেতৃত্ব কি এখন আঙুলের ডগায়? নাকি আমরা সবাই মিলে এক বিশাল কলাগাছ হয়ে গেছি, যাকে দেখে রাফিয়ারাও আর ধরে রাখতে পারেন না হাসি—বা হাত?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *